শীতকালীন পিঠার ১০টি সেরা রেসিপি: স্বাদের খোঁজে শীতে খাবেন কোন পিঠা। শীতকাল আসলেই বাঙালির পিঠা-পুলি খাওয়ার সময়। শীতের হাওয়া, ঘরভর্তি মিষ্টির সুগন্ধ এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পিঠা খাওয়ার আনন্দ এক কথায় অনবদ্য। এই আর্টিকেলে শীতের সময়ের সেরা ১০টি পিঠার রেসিপি নিয়ে আলোচনা করব। এই পিঠাগুলো শুধু সুস্বাদু নয়, আমাদের বাংলা সংস্কৃতির এক অমূল্য ঐতিহ্য।
১. পাটিসাপটা পিঠা,
পাটিসাপটা পিঠা বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় শীতকালীন পিঠাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি মূলত চালের আটা ও নারিকেলের পুর দিয়ে তৈরি হয়। পাটিসাপটা তৈরির জন্য প্রথমে চালের আটা দিয়ে পাতলা পিঠা তৈরি করতে হয়। তারপর নারিকেল ও গুড়ের মিশ্রণ দিয়ে পুর ভরে পিঠাগুলো রোল করতে হয়। এই পিঠা একবার তৈরি করলে সবার মন জয় করতে সক্ষম।
পদ্ধতি:
১. প্রথমে চালের আটা, সুজি, চিনি এবং পানি দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। ২. সারা দিন নারিকেল ও গুড় দিয়ে পুর বানিয়ে পিঠার ভিতরে ভরে রোল করুন। ৩. এরপর তেল দিয়ে সেগুলো ভেজে পটেটো বা নারিকেল দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
![]() |
সহজে তৈরি করুন বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা। |
২. চিতই পিঠা,
চিতই পিঠা অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং সহজে তৈরি করা যায়। এটি একটি সাদা পাতলা পিঠা যা সাধারণত খেজুর গুড় দিয়ে তৈরি হয়। এটি রীতিমতো স্বাদের দিক থেকে ভিন্ন ধরনের এবং চটজলদি প্রস্তুত করা যায়। চিতই পিঠা তৈরি করতে প্রথমে চালের আটা দিয়ে পাতলা পিঠা তৈরি করতে হয় এবং তারপর এর মধ্যে গুড়ের মিশ্রণ ঢালতে হয়।
পদ্ধতি:
১. চিনি, গুড় এবং পানি দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। ২. এবার ছোট ছোট পিঠা তৈরি করে গুড়ের মিশ্রণ ঢালুন। ৩. সেগুলো তেলে ভেজে পরিবেশন করুন।
৩. ভাপা পিঠা,
ভাপা পিঠা বাংলাদেশের শীতকালীন সেরা পিঠাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই পিঠা চালের আটা ও নারিকেল দিয়ে তৈরি হয় এবং এটি প্রস্তুত করার জন্য বিশেষভাবে ভাপে তৈরি করা হয়। এটি অত্যন্ত সুস্বাদু এবং খেতে মিষ্টি।
পদ্ধতি:
১. চালের আটা, গুড় এবং নারিকেল দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। ২. ছোট ছোট গোল করে ভাপে তৈরি করুন। ৩. এই ভাপা পিঠা সুস্বাদু হয়ে উঠবে এবং অতিথিদের মন জয় করবে।
৪. বুড়ি পিঠা,
বুড়ি পিঠা শীতকালীন একটি বিশেষ পিঠা যা গুড় ও নারিকেলের মিশ্রণ দিয়ে তৈরি হয়। এটি অত্যন্ত সুস্বাদু এবং বাঙালি ঘরে খুব জনপ্রিয়। বিশেষ করে, এর মধ্যে মিষ্টি এবং খাস্তা টেক্সচার রয়েছে।
পদ্ধতি:
১. প্রথমে গুড় ও নারিকেল দিয়ে পুর তৈরি করুন। ২. এরপর চালের আটা দিয়ে পিঠা তৈরি করুন। ৩. সেগুলো ভেজে মিষ্টি পরিবেশন করুন।
৫. অলংকা পিঠা,
অলংকা পিঠা শীতের একটি সুস্বাদু ও ঐতিহ্যবাহী পিঠা। এটি সাধারণত ভাঁজা হয় এবং এর মধ্যে থাকে মিষ্টি গুড় ও নারিকেল। অলংকা পিঠা খুব সহজে এবং কম সময়েই তৈরি করা যায়।
পদ্ধতি:
১. গুড়, নারিকেল এবং চালের আটা দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। ২. এরপর সেগুলো ছোট ছোট গোল করে ভাজুন। ৩. মিষ্টি এবং সুস্বাদু অলংকা পিঠা পরিবেশন করুন।
![]() |
শীতকালীন পিঠার ১০টি সেরা রেসিপি: |
৬. কুন্দলি পিঠা,
কুন্দলি পিঠা দেখতে অনেকটা সেমাইয়ের মতো হলেও এটি বিশেষ ধরনের মিষ্টি এবং ভাঁজা পিঠা। এই পিঠা তৈরির জন্য চালের আটা, গুড় এবং নারিকেল ব্যবহার করা হয়। এর বিশেষত্ব হলো এর মধ্যে থাকে সিল্কি টেক্সচার এবং সুগন্ধি স্বাদ।
পদ্ধতি:
১. চালের আটা, গুড় এবং নারিকেল দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। ২. ছোট ছোট কুন্ডলি করে সেগুলো তেলে ভাজুন। ৩. পরিবেশন করুন এবং উপভোগ করুন।
৭. চকোর পিঠা,,
চকোর পিঠা একটি বিশেষ ধরনের পিঠা যা শীতে অনেক জনপ্রিয়। এর মধ্যে থাকে মিষ্টি গুড় এবং নারিকেলের মিশ্রণ। চকোর পিঠা রোজের খাবারের মতো হলেও, এটি বিশেষভাবে শীতকালীন পিঠা।
পদ্ধতি:
১. গুড়, নারিকেল এবং চালের আটা দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। ২. সেগুলো গোল আকারে তৈরি করে তেলে ভাজুন। ৩. পরিবেশন করুন, এবং এটি খেতে বেশ মজাদার।
৮. রুটি পিঠা,
রুটি পিঠা শীতকালে খুবই জনপ্রিয়। এই পিঠা সাধারণত সুজি, চালের আটা ও মিষ্টির সংমিশ্রণে তৈরি হয়। এটি অত্যন্ত সুস্বাদু এবং বাঙালির পছন্দের একটি রেসিপি।
পদ্ধতি:
১. রুটি তৈরি করে মিষ্টি গুড় ও নারিকেল দিয়ে পুর দিন। ২. তারপর এটি ভাজুন এবং মিষ্টি পরিবেশন করুন।
৯. ভাপা চিতই পিঠা,
এটি চিতই পিঠার বিশেষ রূপ। এখানে পিঠাগুলো ভাপে তৈরি হয় এবং এর মধ্যে থাকে সুগন্ধি গুড় ও নারিকেল। ভাপা চিতই পিঠা খেতে খুবই সুস্বাদু।
পদ্ধতি:
১. চিতই পিঠা তৈরি করে ভাপে রাখুন। ২. পরবর্তীতে গুড় ও নারিকেল দিয়ে সুস্বাদু উপভোগ করুন।
১০. নারিকেল পিঠা,
নারিকেল পিঠা শীতকালীন সময়ের সবচেয়ে প্রিয় পিঠাগুলোর মধ্যে একটি। এটি নারিকেল, গুড়, চিনি এবং চালের আটা দিয়ে তৈরি করা হয়।
পদ্ধতি:
১. চালের আটা, নারিকেল, গুড় ও চিনি দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। ২. সেগুলো গোল আকারে ভাজুন এবং পরিবেশন করুন।
0 Comments