সিলেটের ১৫টি দর্শনীয় স্থান: ভ্রমণ গাইড, সময়, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং থাকার ব্যবস্থা।

সিলেটের ১৫টি দর্শনীয় স্থান: ভ্রমণ গাইড, সময়, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং থাকার ব্যবস্থা।
সিলেটের ১৫টি দর্শনীয় স্থান: ভ্রমণ গাইড, সময়, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং থাকার ব্যবস্থা


সিলেট একটি ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপূর্ণ অঞ্চল, যেখানে দর্শনীয় স্থানের অভাব নেই। এখানে পাহাড়, হাওর, ঝর্ণা, চা বাগান এবং ধর্মীয় স্থানগুলোর সৌন্দর্য দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা আসেন। এই আর্টিকেলে সিলেটের ১৫টি জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানের বিস্তারিত তথ্যসহ ভ্রমণের পরামর্শ, সময় এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছি।

শাহজালাল থেকে মাধবকুণ্ড: সিলেটের সেরা দর্শনীয় স্থানগুলি

ডিবির হাওর


বিস্তারিত পড়তে ক্লিক করুন:

১. ডিবির হাওর: (Dibir Haor Sylhet)।

ডিবির হাওর, সিলেটের অন্যতম মনোমুগ্ধকর স্থান হিসেবে পরিচিত, যা লাল শাপলার বিল নামে বিখ্যাত। এটি মেঘালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এবং এর জলরাশির মাঝে ছড়িয়ে থাকা লাল শাপলা যেন প্রকৃতির এক অপূর্ব দৃশ্য। প্রতিবছর শীতকালে অসংখ্য পরিযায়ী পাখি এখানে আসে, যা হাওরের সৌন্দর্যকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। ভোরবেলা, যখন শাপলা ফুলগুলো ফুটে থাকে, এবং পাহাড়ি দৃশ্যের মাঝে পাখির কিচিরমিচির শোনা যায়, তখন এটি এক নিখুঁত প্রাকৃতিক দৃশ্য সৃষ্টি করে।

কিভাবে যাওয়া যায়:
সিলেট শহর থেকে জাফলং রাস্তা ধরে যাওয়া যেতে পারে। এরপর জৈন্তাপুর বাজার থেকে কিছুটা এগিয়ে ডিবির হাওর পৌঁছানো সম্ভব। মটর সাইকেল বা গাড়ি নিয়ে যাওয়া সবচেয়ে সহজ উপায়। ভোর বেলা যাওয়ার পরিকল্পনা করলে, শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে সবচেয়ে ভালোভাবে।

আরো পড়ুন:

হাকালুকি হাওর

সিলেট ভ্রমণ গাইড: সিলেটের সেরা ৮টি দর্শনীয় স্থান


২. হাকালুকি হাওর: (Hakaluki Haor)

হাকালুকি হাওর সিলেটের অন্যতম বৃহত্তম হাওর এবং দেশের এক বিশেষ প্রাকৃতিক সম্পদ। এখানকার বিশাল জলাভূমি, মাছ ধরার ঐতিহ্য এবং পাখির অভয়ারণ্য দর্শনার্থীদের জন্য খুবই আকর্ষণীয়। এই হাওরটি একদম শীতকালে সুন্দর দৃশ্য উপস্থাপন করে, বিশেষ করে যখন হাওরের পানি কমে যায় এবং চারপাশে শস্যক্ষেত্র ছড়িয়ে পড়ে।

কিভাবে যাওয়া যায়:
সিলেট শহর থেকে সিএনজি বা বাসে সহজে হাকালুকি হাওরে পৌঁছানো সম্ভব। সিলেট থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরত্বে এটি অবস্থিত, তাই গাড়ি বা বাসে ১.৫ থেকে ২ ঘণ্টার মধ্যে সেখানে পৌঁছানো যায়।

আরো পড়ুন:

অপ্রচলিত সিলেট: ৭টি দর্শনীয় স্থান যা আপনাকে মিস করা উচিত নয়

লালাখাল



৩. লালাখাল: (Lalakhali Sylhet)

লালাখাল, সিলেটের একটি ঐতিহাসিক এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্থান, যার নাম তার লাল মাটির কারণে হয়েছে। এখানে পাহাড়ের মাঝে বিস্তৃত নীল জলাশয়, সবুজ বনভূমি এবং শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। লালাখালের পানি স্বচ্ছ এবং রঙিন, যা এটি একটি বিশেষ স্থান হিসেবে পরিচিত।

কিভাবে যাওয়া যায়:
সিলেট শহর থেকে গাড়ি বা বাসে ২৫ কিলোমিটার দূরে লালাখাল অবস্থিত। বিশেষ করে জাফলং রোড ধরে লালাখালে পৌঁছানো যায়।

আরো পড়ুন:

সিলেটের ১০টি দর্শনীয় স্থান যা আপনার ভ্রমণ তালিকায় থাকা উচিত

রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট

৪. রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট: (Ratargul Swamp Forest)

রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট, সিলেটের অন্যতম সুন্দর এবং অদ্ভুত সুন্দর একটি জলাভূমি বনভূমি। এটি দেশের একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট, যেখানে জলাভূমির মাঝে সবুজ গাছগাছালি বেড়ে ওঠে। জলসীমার উপর ঝুলন্ত গাছগুলোর দৃশ্য সত্যিই অবর্ণনীয়।

কিভাবে যাওয়া যায়:
সিলেট শহর থেকে গাড়ি বা সিএনজি নিয়ে রাতারগুল পৌঁছানো সম্ভব। শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ফরেস্ট।

আরো পড়ুন:

সিলেট ভ্রমণ: ১৫টি দর্শনীয় স্থান ও ভ্রমণ বিষয়ক সম্পূর্ণ গাইড


৫. বিছনাকান্দি: (Bichnakandi Sylhet)

বিছনাকান্দি সিলেটের একটি অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্থান। এখানকার পাহাড়, ঝর্ণা এবং ছোট ছোট নদী ও পাথরের গঠন প্রকৃতির এক অসাধারণ সৃষ্টি। বিশেষ করে বিছনাকান্দির পাহাড়ি পরিবেশ এবং নিস্তব্ধতা ভ্রমণপ্রেমীদের মন জয় করে নেয়।

কিভাবে যাওয়া যায়:
সিলেট শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে বিছনাকান্দি অবস্থিত। সিলেট শহর থেকে গাড়ি বা সিএনজিতে যেতে প্রায় ১.৫ ঘণ্টা সময় লাগে।

আরো পড়ুন:

সিলেটের ১৫টি বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান: ভ্রমণ গাইড, সময়, যোগাযোগ ও থাকা-খাওয়ার পরামর্শ

ভোলাগঞ্জ

৬. ভোলাগঞ্জ: (Bholaganj Sylhet)

ভোলাগঞ্জ সিলেট জেলার একটি ছোট গ্রাম, যা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এখানে রয়েছে অনেকগুলো ঝর্ণা, নদী এবং পাহাড়ি এলাকায় বিস্তৃত গ্রামীণ দৃশ্য। বিশেষ করে ভোলাগঞ্জের সাদা পাথরের পরিবেশ বিশেষভাবে পরিচিত।

কিভাবে যাওয়া যায়:
সিলেট শহর থেকে ভোলাগঞ্জ প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সিএনজি বা বাসে পৌঁছানো যায়।

আরো পড়ুন:

সিলেট ভ্রমণ: ১৫টি জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান, সময়, যোগাযোগ ও থাকার ব্যবস্থা

তামাবিল

৭. তামাবিল: (Tamabil Sylhet)

তামাবিল, সিলেট জেলার একটি সীমান্ত এলাকা, যেখানে ভারত ও বাংলাদেশ দুটি দেশের সীমান্ত রয়েছে। এখানে রয়েছে প্রাকৃতিক দৃশ্যের পাশাপাশি স্থানীয় বাজার এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য।

কিভাবে যাওয়া যায়:
সিলেট শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে তামাবিল। সিলেট থেকে বাস বা গাড়িতে সরাসরি তামাবিল পৌঁছানো যায়।

আরো পড়ুন:

সিলেটের সেরা ১৫টি দর্শনীয় স্থান এবং ভ্রমণ তথ্য: যা আপনাকে জানতেই হবে

জাফলং

৮. জাফলং: (Jaflong Sylhet)

জাফলং, সিলেটের এক নৈসর্গিক স্থল যা তার পাহাড়, নদী এবং ঝর্ণার জন্য বিখ্যাত। বিশেষ করে পিয়াইন নদী এবং সুন্দর সবুজ পাহাড়ের দৃশ্য পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। এখানকার পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুবই জনপ্রিয়, বিশেষ করে শীতকালে এখানে এসে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।

কিভাবে যাওয়া যায়:
সিলেট শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে, গাড়ি বা বাসে যাওয়া সম্ভব। জাফলং রোড ধরে যাওয়া যায়।

আরো পড়ুন:

সিলেটের ১৫টি সেরা দর্শনীয় স্থান: পূর্ণাঙ্গ ভ্রমণ গাইড ও তথ্য

সাদা পাথর

৯. সাদা পাথর: (Sada Pathar Sylhet)

সাদা পাথর, সিলেটের একটি ঐতিহাসিক এবং প্রাকৃতিক স্থান। এখানকার বিশাল সাদা পাথরগুলি এবং পাহাড়ি পরিবেশ দর্শকদের কাছে বিশেষভাবে আকর্ষণীয়।

কিভাবে যাওয়া যায়:
সিলেট শহর থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানে পৌঁছানোর জন্য সিএনজি বা গাড়ি ব্যবহৃত হয়।

আরো পড়ুন:

সিলেটের ১৫টি দর্শনীয় স্থান: ভ্রমণ গাইড, সময়, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং থাকার ব্যবস্থা।

সিলেট জাতীয় উদ্যান

১০. সিলেট জাতীয় উদ্যান: (Sylhet National Park)

সিলেট জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের অন্যতম একটি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। এখানকার অরণ্য, পাহাড় এবং বন্যপ্রাণী দেখে প্রকৃতি প্রেমীরা মুগ্ধ হন। এ জাতীয় উদ্যানে আসলে জীবজন্তুর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চোখে পড়বে।

কিভাবে যাওয়া যায়:
সিলেট শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সিলেট জাতীয় উদ্যান। গাড়ি বা সিএনজি দিয়ে সহজেই পৌঁছানো যায়।

আরো পড়ুন:

সিলেটের ১৫টি দর্শনীয় স্থান: ভ্রমণ গাইড, সময়, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং থাকার ব্যবস্থা।

শাহজালাল মাজার শরীফ

১১. শাহজালাল মাজার শরীফ: (Shahjalal Mazar Sharif)

শাহজালাল মাজার শরীফ, সিলেটের ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এটি শাহজালাল রাহমাতুল্লাহ আলাইহির মাজার। এখানে প্রতি বছর অসংখ্য ভক্তের সমাগম ঘটে।

কিভাবে যাওয়া যায়:
সিলেট শহরের কেন্দ্রস্থলে মাজারটি অবস্থিত। যেকোনো যানবাহন দিয়ে এখানে পৌঁছানো যায়।

আরো পড়ুন:

সিলেটের ১৫টি দর্শনীয় স্থান: ভ্রমণ গাইড, সময়, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং থাকার ব্যবস্থা।

শাহপরান মাজার শরীফ

১২. শাহপরান মাজার শরীফ: (Shahparan Mazar Sharif)

শাহপরান মাজার শরীফ, সিলেটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থান, যেখানে শাহপরান রাহমাতুল্লাহ আলাইহির মাজার রয়েছে। এটি ভক্তদের জন্য এক বিশেষ স্থান।

কিভাবে যাওয়া যায়:
এটি সিলেট শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত, তাই যেকোনো ট্যাক্সি বা অটোরিকশায় পৌঁছানো সম্ভব।

আরো পড়ুন:

সিলেটের ১৫টি দর্শনীয় স্থান: ভ্রমণ গাইড, সময়, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং থাকার ব্যবস্থা।

লাক্কাতুরা চা বাগান

১৩. লাক্কাতুরা চা বাগান: (Lakkatura Tea Garden)

লাক্কাতুরা চা বাগান সিলেটের একটি অন্যতম পরিচিত চা বাগান। এখানে চায়ের সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং বিস্তৃত চা বাগানের দৃশ্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

কিভাবে যাওয়া যায়:
সিলেট শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, গাড়ি বা সিএনজি দিয়ে পৌঁছানো যায়।

আরো পড়ুন:

সিলেটের ১৫টি দর্শনীয় স্থান: ভ্রমণ গাইড, সময়, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং থাকার ব্যবস্থা।

আগুন পাহাড়

১৪. আগুন পাহাড়: (Agun Pahar Sylhet)

আগুন পাহাড়, সিলেটের একটি অন্যতম প্রাকৃতিক স্থান, যা এর অনন্য নাম এবং পাহাড়ী সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এখানে পর্বত আরোহণের সুযোগ রয়েছে।

কিভাবে যাওয়া যায়:
সিলেট শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, গাড়ি বা সিএনজি ব্যবহার করে পৌঁছানো যায়।

আরো পড়ুন:

সিলেটের ১৫টি দর্শনীয় স্থান: ভ্রমণ গাইড, সময়, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং থাকার ব্যবস্থা।

সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা

১৫. সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা: (Sangrampunji Waterfall)

সংগ্রামপুঞ্জি, সিলেটের একটি রহস্যময় ঝর্ণা। এটি মায়াবী ঝর্ণা হিসেবেও পরিচিত এবং এর আশেপাশের পরিবেশ মনোমুগ্ধকর।

কিভাবে যাওয়া যায়:
সিলেট শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে, সিএনজি বা গাড়ি দিয়ে এখানে যাওয়া সম্ভব।

আরো পড়তে এখানে ক্লিক করুন:






Post a Comment

0 Comments