দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখর খাগড়াছড়ির নিউজিল্যান্ড: পাহাড়ি সৌন্দর্যের নতুন আকর্ষণ!

দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখর খাগড়াছড়ির নিউজিল্যান্ড: পাহাড়ি সৌন্দর্যের নতুন আকর্ষণ!
পাহাড়ি সৌন্দর্যের নতুন আকর্ষণ!

দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখর খাগড়াছড়ির নিউজিল্যান্ড: পাহাড়ি সৌন্দর্যের নতুন আকর্ষণ! খাগড়াছড়ি জেলার অন্তর্গত নিউজিল্যান্ড পাড়া বাংলাদেশের অন্যতম অনন্য প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থান। পাহাড়ের কোলে নীলক্ষেতে মোড়া সমতল এই ভূমি, যা স্থানীয়দের মুখে মুখে ছড়িয়ে পায় “নিউজিল্যান্ড” নামে। ২০০০ সালের বেশি বছর ধরে পাহাড়ি জনজাতির আবাসভূমি হলেও, মাত্র দুই দশক আগে থেকেই পর্যটকদের চোখে পর্দার ছোঁয়া অনুভূতি জাগায় এই এলাকা। এখন প্রতি সপ্তাহান্তে শত শত পর্যটক ছুটে আসে সাদা মেঘের আড়ালে ডুবে থাকা সবুজ শস্যক্ষেত দেখার জন্য।

👉আরো পড়তে ক্লিক করুন:

💌নিউজিল্যান্ড পাড়ার অবস্থান ও সহজ অভিগম্যতা।

👉অবস্থান: খাগড়াছড়ি শহর থেকে প্রায় ১.৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, পানখাইয়া পাড়া ও পেরাছড়ার সংমিশ্রণে গঠিত।

👉যাতায়াত: ঢাকা–খাগড়াছড়ি বাস: শ্যামলী, হানিফ, শান্তি পরিবহন; ভাড়া প্রায় ৫২০ টাকা। খাগড়াছড়ি শহর–নিউজিল্যান্ড পাড়া: সিএনজি/অটো রিকশা দিয়ে মাত্র ১০ টাকা।

👉নিজস্ব গাড়ি: ঢাকা-চট্টগ্রাম-ফেনী-খাগড়াছড়ি রোড (প্রায় ৬০০ কিমি), অভিজ্ঞ ড্রাইভারদের জন্য আকর্ষণীয় পাহাড়ি রাস্তা

এখানে পৌঁছানোর সময়, রাস্তার পাশের সবুজ জামজমাট পাহাড় আর পাহাড়ি ঝর্ণার শোভা আপনাকে সহজেই মুগ্ধ করে ফেলবে।

👉আরো পড়ুন:

💌নিউজিল্যান্ড” নামের উৎস।

জনশ্রুতি অনুযায়ী, ১৯৯৮ সালের একটি ভ্রমণে এক পাহাড়ি প্রবীণ মন্তব্য করেন,

“আহা, ঠিক নিউজিল্যান্ডের মতো প্রশান্ত বাতাস আর চিরসবুজ মেদিনী!”

সেই থেকেই নাম পায় “নিউজিল্যান্ড পাড়া”। বাস্তবে যদিও এখানে তুষার নেই, তবুও দিগন্ত বিস্তত সবুজ সমতল আর শান্ত বাতাস এক অভূতপূর্ব অনুভূতি দেয়।

👉আরো পড়ুন:

💌প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও দর্শনীয় স্থানসমূহ।

১। বিস্তৃত সবুজ শস্যক্ষেত:

লাল মাটি আর নীল আকাশের মাঝে দৃশ্যমান ধান কিংবা গমের সবুজ শ্যাওলা দুপুরে খাঁটি ক্যানভাসের মতো প্রতীয়মান হয়।

২। আলুটিলা গুহা ও ঝর্ণা:

আলুটিলা গুহা: পাশেই অবস্থিত, অদ্ভুত প্রাকৃতিক সুড়ঙ্গের অভিজ্ঞতা

রিসাং ঝর্ণা: উৎসবমুখর বর্ষা ঋতুতে পর্যটকদের সবচেয়ে প্রিয় স্থান

৩। সূর্যোদয়–সূর্যাস্ত:

প্রাকৃতিক মেঘের ভেলা ও পাহাড়ের ঢেউ খেলানো দৃশ্যের সঙ্গে সূর্যোদয়–সূর্যাস্তের দৃশ্য এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত সৃষ্টি করে।

৪। স্থানীয় ফ্লোরা ও ফৌনা:

শিমুল, গামছা, বিভিন্ন ছত্রাক, শতাধিক প্রজাতির পাখি—এসবই পরিচয় দেয় এখানকার জীববৈচিত্র্য।

👉আরো পড়ুন:

💌দর্শনার্থীর ভিড় ও জনপ্রিয় কার্যক্রম।

প্রতি সপ্তাহান্তে প্রায় ৫০০–৬০০ পর্যটক ছুটে আসে। তোলা যায় অসংখ্য ফটোগ্রাফি, হাইকিং ট্রেইল ধরে হাঁটা, বেসিক পিকনিক সেটআপ—এগুলি এখানকার মাস্ট-ডু অ্যাক্টিভিটিগুলো:

গ্রুপ ট্রেকিং: পাহাড়ি সড়ক ধরে ছোট গ্রুপে হাঁটা

ড্রোন ফোটোগ্রাফি: সুন্দর সবুজের ওপর উড়ন্ত ড্রোনে আকাশচুম্বী শ্যুট

বন্যপ্রাণী পর্যবেক্ষণ: বিশেষ করে টিয়া পাখি এবং পাহাড়ি খরগোশ

👉আরো পড়ুন:

💌নিউজিল্যান্ড পাড়া ভিজিটের সেরা সময়।

বর্ষা: জুন–সেপ্টেম্বর:

Pros: ঝর্ণার পূর্ণ স্ফূর্তি, মেঘের আড়ালে লুকোচুরি খেলানো পাহাড়।

Cons: রাস্তা কিছুটা হোঁচটখাওয়া, গ্রীষ্মকালে স্লিপারি।


শুক্লা ঋতু: অক্টোবর–ফেব্রুয়ারি:

Pros: পরিষ্কার আকাশ, হালকা শীতের ঠান্ডা বাতাস।

Cons: ঝর্ণার জলধারা কমে।

👉আরো পড়ুন:

💌নিউজিল্যান্ড পাড়ায় ভ্রমনকালীন  থাকার ও খাওয়ার ব্যবস্থা।

হোটেল: হোটেল শৈল সুবর্ণ (মডার্ন রুম, ফ্রি ওয়াই-ফাই), হোটেল জেরিন (বাজেট ফ্রেন্ডলি), হোমস্টে: স্থানীয় আদিবাসী পরিবারে থেকে প্রকৃত পাহাড়ি জীবনধারা অনুভব।

খাবার: বাম্বু চিকেন (আদিবাসীদের বিখ্যাত মেনু), জুমের ভাত (মাঠে কাটা ধান পাকা ভাত), আলুর পাতা ভর্তা (আদিবাসী রান্নার স্বাদ)।

👉আরো পড়তে ক্লিক করুন:

💥উপসংহার: খাগড়াছড়ি নিউজিল্যান্ড পাড়া।

খাগড়াছড়ির নিউজিল্যান্ড পাড়া শুধুমাত্র একটি এলাকা নয়, এটি এক স্বপ্নিল অভিজ্ঞতা। এখানে প্রতিটি পদক্ষেপে প্রকৃতির আলিঙ্গনে আপনিও হারিয়ে যেতে চান। সূর্যোদয়ের কিরণ থেকে ঝর্ণার ঝর্না, পাহাড়ি পাখির কূজন—এগুলো মিশে এক অপূর্ব স্মৃতিতে। তাই পরবর্তী ছুটিতে দিন-রাতের নিয়ে পরিকল্পনা করুন, এবং মাতৃপ্রকৃতির কোলে হারিয়ে যান “নিউজিল্যান্ডের” এই স্বপ্নপুরীতে।

Post a Comment

0 Comments