![]() |
বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান(Bangladesh vs Pakistan) লাইভ স্কোরকার্ড ২০২৫: |
বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান (Bangladesh vs Pakistan) লাইভ স্কোরকার্ড ২০২৫: সর্বশেষ আপডেট, ফলাফল ও পরিসংখ্যান। বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান ম্যাচ ছিল ২০২৫ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ ‘এ’ র একটি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাতে। এই ম্যাচ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য, লাইভ স্কোর এবং পরিসংখ্যান জেনে নিন এখানে।
ম্যাচটি ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে, নির্ধারিত সময়ে উপর্যুক্ত আবহাওয়া অত্যন্ত খারাপ হওয়ায় একটিও বল পড়ে না—বাস্তবে ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। দুই দলই এই এক পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নেয় এবং টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ পুনরায় চালু হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট হিসেবে পরিচিতি ফিরে পেয়েছে। ফেব্রুয়ারি ১৯ থেকে মার্চ ৯, ২০২৫ পর্যন্ত পাকিস্তান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত (দুবাই) যৌথভাবে হোস্ট করে এই টুর্নামেন্ট। গ্রুপ ‘এ’-তে ছিল পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ভারত ও নিউজিল্যান্ড। দুইটি দল সেমিফাইনালে যাওয়ার সুযোগ পায়। বাংলাদেশের গ্রুপ ‘এ’ জয়ী হয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছানোর লক্ষ্য ছিল, তবে পাকিস্তান-বাংলাদেশ ম্যাচ শুরুর আগেই বৃষ্টিপাতের কারণে পরিত্যক্ত হওয়ায় উভয় দলই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ম্যাচের দিন সকালেই রাওয়ালপিন্ডি অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। দুপুর আড়াইটার দিকে বৃষ্টির প্রবল দমন দেখে ম্যাচ শুরুর জন্য কভার সরানোর সময়ও হয়নি। মাঠের উপরেও কাঁচামাটির পানি জমে যায়, যা জরুরি পিচিংয়ের জন্যও অনুপযোগী করে তোলে। এক পর্যায়ে উম্পায়াররা মাঠ পরিদর্শন করেন, তবে অবস্থা উন্নত না হওয়ায় ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। উক্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ এতটাই প্রবল ছিল যে দর্শকরা ছাতা নিয়ে নগ্ন চোখে অপেক্ষা করতে থাকে, কিন্তু খেলা শুরুর কোনও সম্ভাবনা ছিল না।
যদিও ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়, তবে দুই দল ম্যাচ শুরুর আগেই স্কোয়াড ঘোষণা করেছিল।
👩🦯বাংলাদেশের ঘোষিত ইলেভেন (প্রথমে ঘোষিত):
👉লিটন দাস (ক্যাপ্টেন)
👉তৌহিদ হৃদয়
👉মাহমুদউল্লাহ (অলরাউন্ডার)
👉সাজিদ খান (ওপেনিং ব্যাটসম্যান)
👉তাকি সাকিব
👉মুহাম্মদ শহিদ
👉আবু জায়েদ
👉রিশাদ হোসেন (লেগ স্পিনার)
👉নাহিদ রানা (পেসার)
👉মুস্তাফিজুর রহমান (পেসার)
👉মাহমুদউল্লাহ (ওপেনার)
👩🦯পাকিস্তানের ঘোষিত ইলেভেন (প্রথমে ঘোষিত):
👉বাবর আজম (ক্যাপ্টেন)
👉মুহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেটকিপার)
👉ফখর জামান (ওপেনিং ব্যাটসম্যান)
👉সাদ আলী (ব্যাটসম্যান)
👉আসিফ আলি (ব্যাটসম্যান)
👉শাদাব খান (অলরাউন্ডার)
👉ইমাদ ওয়াহেদ (অলরাউন্ডার)
👉শাহীন আফ্রিদি (পেসার)
👉নাসিম শাহ (পেসার)
👉মুহাম্মদ নবাজ (অলরাউন্ডার)
👉আমির (পেসার)
রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পিচ সাধারণত পেসারদের অনুকূল হয়। পিচে মাঝারি-প্রকারের বাউন্স পাওয়া যায়, যা পেস বোলারদের জন্য সহায়ক। গত কয়েক বছর ধরে এই মাঠে টস জিতে বোলিং করার টিমকে সুবিধা পাওয়া গেছে, কারণ পিচ প্রথম দিকে আর্দ্র থাকে ও পেসারদের বাউন্স বা সুইং তৈরি করে। কিন্তু এই ম্যাচে বৃষ্টির কারণে পিচ তৈরির সুযোগই হয়নি; মাঠ কভার থাকার কারণে আদতে কোনও পিচ পরীক্ষণই হলো না। আগের ম্যাচে (২০২৪ সালের নভেম্বরে) এখানে টেস্টে পিচ আউটসাইড-ই বেশি সহায়ক ছিল—স্পিন কিছুটা সাহায্য করলে, কিন্তু উদীয়মান পেস উপরে উঠে গিয়েছিল।
🔺ম্যাচ পরিত্যক্তের পর দলের পরিকল্পনা ও প্রতিক্রিয়া।
ম্যাচ পরিত্যক্তের পর বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন দাস বলেন, “আমাদের প্রস্তুতি ভালোই ছিল—ইনিংসও ভালো গড়ে উঠছিলো, কিন্ত আবহাওয়া আমাদের বিরুদ্ধে চলে গেলো। এই ম্যাচের প্রত্যাশা করে আমরা সিরিজে উন্নতি প্রদর্শন করতে চাইছিলাম, কিন্তু বৃষ্টির কারণে সেটি হলো না।” পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজমও একই ধরনের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেন, “টুর্নামেন্টে আগ্রহ কমে গেল—আমরা ফর্মে ছিলাম, তবে আবহাওয়া সব ধ্বংস করে দিল। ভবিষ্যতে ফিরে গিয়ে মাঠে আরও বেশি আক্রমণাত্মক রুপ দেখাবো।” উভয় দলই এই পরিত্যক্ত ম্যাচকে ভুলে গিয়ে সেমিফাইনাল নয় হলেও পরবর্তী সিরিজে প্রস্তুতি নেবে।
![]() |
বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান(Bangladesh vs Pakistan). |
🔺দুই দলের হেড-টু-হেড অবস্থা (Head-to-Head).
বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান মুখোমুখি লড়াইয়ে ক্রিকেট ইতিহাসে দীর্ঘ সময় ধরে উত্তেজনা বজায় আছে।
👩🦯ওডিআই: মোট ৩৯টি ওডিআই ম্যাচে পাকিস্তান জেতেছে ৩৪টি, বাংলাদেশ জিতেছে ৫টি। সরাসরি টেস্ট-ট্রফিওতেও পাকিস্তানের ঝাঁজ ধরেছে; বিবর্তিত সাম্প্রতিক পাঁচটি ওডিআইতে পাকিস্তান জিতেছে ৩টি, বাংলাদেশ জিতেছে ১টি, বাকি ১টি হওয়া পরিত্যক্ত থাকে।
👩🦯টি২০: ১৯টি টটোয়েন্টি ম্যাচে পাকিস্তান জয়ী হয়েছে ১৬টি, বাংলাদেশ জয়ী হয়েছে ৩টি।
👩🦯টেস্ট: ১৩টি টেস্টে পাকিস্তান জিতেছে ১২টি, বাংলাদেশ ড্র করেছে ১টি। প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম-ever টেস্ট জয় ছিল ২০২৪ সালের আগস্টে, যখন মেহেদি হাসান মিরাজের ৪/২১ এবং শতককারী মুশফিকুর রহমান দলের হাতে জয় এনে দেন।
🔺২০২৫ সালের মুখোমুখি লড়াইয়ের পর্যালোচনা।
২০২৪ সালে বাংলাদেশ পাকিস্তানে সফরে এসে একটি টেস্ট সিরিজে ২–০ ফলাফলে পাকিস্তানকে হারায়। এই সিরিজে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। কিন্তু ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচে ভারতকে হারানোর পর পারফরম্যান্স কিছুটা কমে যায়। বাংলাদেশ ভারতকে হারিয়ে ১০ ওভার গ্রুপের শিরোনামের দিকে এগোচ্ছিল, কিন্তু পরের ম্যাচ নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয় এবং অবশেষে পাকিস্তান ম্যাচটি পরিত্যক্ত হওয়ায় গ্রুপ থেকে বিদায় নিতে হয়। বিকল্পভাবে, পাকিস্তানও একই গ্রুপে খেলার পরিস্থিতি টেনে নিয়ে যেতে পারেনি—নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে ফর্ম যাওয়া এবং অবশেষে বাংলাদেশ ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হলে গ্রুপ থেকে ছিটকে যায়।
🔺বাংলাদেশের ক্রিকেট বর্তমান মোড়।
গত কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশি ক্রিকেটে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। মুশফিকুর রহমান, শাকিব আল হাসানদের অভিজ্ঞতার পাশাপাশি তরুণ প্রতিভা যেমন তৌহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ এবং সৌম্য সরকার উঠে এসেছে। ২০২৫ সালের প্রথম দিকে বাংলাদেশের লাভাক্তদশক মিলিয়ন ডলার নিয়েও চলেছিল—ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমি থেকে নতুন পেস বোলাররা আগমন করেছিল। তবে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ পর্ব জরুরি ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে দলের আত্মবিশ্বাসে প্রভাব পড়ে।
পাকিস্তান দীর্ঘদিনের ব্যাটিং-বোলিং ব্যালান্স নিয়ে বিবাদে আছে। বাবর আজমের অধিনায়কত্বের আওতায় দল শক্তিশালী হওয়ার আশায় ছিল, কিন্তু অস্বস্তিকর ফর্ম, ইনজুরির কারণে দল মার খায়। ২০২৫ সালের গ্রুপ পর্বে আটার পরে, পাকিস্তান মাঠে ভালো কাজ করতে পারেনি। ফখর জামানের ব্যাটিং ফর্ম তলানিতে চলে গিয়েছিল, শাদাব খান ও মহম্মদ নবাজ অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দিতে ব্যর্থ হয়। নতুন ডেকে আনা পেস বোলারদের (আমির, নাসিম শাহ) উপর নির্ভরতা বেড়েছে, তবে স্পিন আছে না পাওয়ায় ব্যাটসম্যানরা চাপের মুখে পড়ে যায়।
🔺ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ এবং সমাধান।
বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান দুই দলই এখন মূলত ICC টি২০ বিশ্বকাপ ২০২৬ এবং অন্যান্য সিরিজের দিকে নজর দিচ্ছে। বাংলাদেশি দলকে নিচের বিষয়গুলো মনোযোগ দিতে হবে:
✅ব্যাটিং গভীরতা: মিডল অর্ডার মানিয়ে নিচ্ছে না, নতুন ক্রীড়াবিদদের প্রশিক্ষণ বাড়ানো জরুরি।
✅বোলিং সংহতি: পেস বোলিংয়ে আক্রমণাত্মক ছাপ ফেলতে পারছে না। বিশেষ করে চরম পরিস্থিতিতে যেভাবে দাপট দেখানো যায়, সেটি विकसित করা দরকার।
✅মানসিক দৃঢ়তা: বড় ম্যাচগুলিতে চাপ সামলে গেম নিয়ন্ত্রণ করা শেখা। শান্টোর মত অধিনায়ককে মেন্টাল কোচিং দেওয়ার প্রয়োজন।
বিশ্বসেরা ফরম্যাটে মানিয়ে নেওয়া: ক্রিকেটের প্রতিটি ফরম্যাটে রোটেশন ও বিশ্রাম পরিকল্পনা কাজ করছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।
✅স্পিন-বোলিং উন্নয়ন: স্পিন বিভাগ সবসময়ই চ্যালেঞ্জ। নতুন স্পিনারদের বিকাশে সময় ও সুযোগ দিতে হবে।
✅পরিবর্তন ব্যবস্থাপনা: বড় টুর্নামেন্টের আগে সঠিক দল পরিচালনা ও ইনজুরি ব্যবস্থাপনা জরুরি।
0 Comments